অণুগল্প : বাঘ

অণুগল্প : বাঘ

সুব্রত সরকার

“তারপর?…”
“কি বলব আপনাকে, ঐ বিশাল বাঘকে তো বন্দী করা হোলো..”
“ঘুমিয়েই পড়ল বাঘ!”
“ঘুম পাড়ানি গুলি তো মোক্ষম অস্ত্র বাঘকে ঘায়েল করে বন্দী করার।”
“খুব দুঃসাহসিক ব্যাপার!”
“সে কথা আর বলতে… গ্রামবাসীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল।
“তাই!…”
“গোরু,ছাগল,মানুষ কাউকেই ছাড়ছিল না সে…”
” শেষ পর্যন্ত আপনারাই ছুটলেন?”

” ফরেস্টে কাজ করি। খবর পেলে তো ছুটতেই হবে। সারারাত জেগে লড়াই করে তবে খাঁচাবন্দী করতে পেরেছিলাম।”
” তারপর কি হল?”
“লোহার খাঁচাটা সবাই মিলে চাগিয়ে নৌকোয় তুলতে যাব….”
” তখনই ঘটল বিপদটা!…”
” আমারই ভুল ছিল… বুড়ো আঙুল টা লোহার খাঁচার ওপর রেখেছিলাম…”
“ইশ্…”
“আচমকা ঘুম ভেঙে মারল এক থাবা।”
“আহা!…”
“খসে পড়ল বুড়ো আঙুল টা… ফিনকি দিয়ে রক্ত…”
“তবু খাঁচা ছেড়ে দেন নি?”
“না। দিই নি।”
“তারপর…”
“সে তো অনেক কথা-কাহিনি। কত বছর আগের কথা!…”
“বুড়ো আঙুল টা জন্মের মত হারিয়ে ফেললেন!”
” ফেললাম।”
“রাগ হয় নি বাঘটার ওপর?”
“হয়েছিল… কিন্তু… “
“কিন্তু কি…”
এতদিন পর আর সে রাগ নেই।”

“এখন বাঘের সামনে বসেই ডিউটি করছেন!”
” করছি।”
“ফের যদি বাঘ ধরতে ছুটতে হয়….”
“যাব।”
“ভয় পাবেন না?”
“না।”
“রাগ হবে না?”
“না। বিশ্বাস করুন, বাঘ এমন এক প্রাণী, ওঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালে মনে হবে, সত্যিই তুমি রাজা।মহারাজা, তোমারে সেলাম!…”
“কেন বলছেন?”
“উফ্ কি সৌন্দর্য্য বাঘের। প্রেমের চোখ দিয়ে দেখতে ইচ্ছে করবে!..”
“তাই!..”
“হ্যাঁ কি রাজকীয় তাঁর চলন, চাহনি, হুঙ্কার! “

” চাকরি আর কত দিন?”
“এই তো আর কয়েকমাস মাত্র!..”
“তারপর….”
“খুব মনে পড়বে এসব কথা! কেউ তো আর শুনতে, জানতে চায় না… চাইলে এমন কত গল্প জমে আছে, বলে একটু হাল্কা হতাম!…”

spot_img
spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img