হোমভ্রমণচুপী : পরিযায়ী পাখিদের গোপন আস্তানা

চুপী : পরিযায়ী পাখিদের গোপন আস্তানা

চুপী : পরিযায়ী পাখিদের গোপন আস্তানা

দেবস্মিতা নাগ: বর্ধমানের পূর্বস্থলী স্টেশনের দুরত্ব কলকাতা থেকে ১২০ কিলোমিটার। হাওড়া-কাটোয়া লোকালগুলোতে চেপে পৌঁছে যাওয়া যায় পূর্বস্থলীতে। তারপর সেখান থেকে টোটো চড়ে যেতে হবে কাষ্ঠশালী গ্রামে। গ্রামের শেষ প্রান্তে পাওয়া যাবে চুপীকে।

চুপী এক ছোট্ট জনপদ।গঙ্গার শতাব্দী প্রাচীন প্রাক্তন এক বিশাল খাতের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে, যা মূল গঙ্গা থেকে বিছিন্ন হয়ে এখন এক বিশালাকার অশ্বকুরাকৃতি হ্রদে পরিণত হয়েছে। সে হ্রদ এতই বিশাল যে, তাতে অনায়াসে এঁটে গেছে ছোট খাটো এক দ্বীপ,যার নাম ইদ্রাকপুর।

চুপীতে রয়েছে সুসজ্জিত এক বাগানবাড়ি,যেটি প্রকৃতপক্ষে একটি সরকারি গেস্ট হাউস। এর আসে পাশে রয়েছে বেশ কিছু কটেজ। রয়েছে পিকনিক করার ব্যবস্থাও। আর আছে পাখি দেখার জন্যে তৈরি একটি সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। শীতকালে পাখির কলতানে মেতে ওঠে এখানকার প্রকৃতি। দেখা মেলে লক্ষাধিক নাম না জানা পরিযায়ী পাখির।

আর এই জলাশয়ের একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ,জলাশয়টি স্বচ্ছতোয়া। নৌকায় ভাসতে ভাসতে জলাশয়ের তলদেশের আগাছা পর্যন্ত স্পষ্ট দেখা যায়। এই বৈশিষ্ট্যের পিছনে কি কারণ আছে,তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণাও চলছে। নভেম্বরের শেষ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সরগরম থাকে পাখির স্বর্গ চুপী।

বারোমাসই স্থানীয় মাঝিদের দেখা মেলে জলাশয়ের তীরে। এঁরাই সরোবরে সফর করান। তবে গেস্ট হাউস বা কটেজে রাত্রিবাস করতে হলে আসতে হবে মরসুমে। মরসুমে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে ফুলে ফুলে বাগান সাজানো হয় গেস্ট হাউস চত্বরে। নবদ্বীপ ধাম স্টেশনের পর দুটো স্টেশন টপকালে ঠিক তিন নম্বর স্টেশনই পূর্বস্থলী।

যদি নবদ্বীপের কোনো পর্যটক ঐ সুপ্রাচীন নগরে ইতিহাসের স্বাদ নেওয়ার পর ভূগোলের খোঁজে কিছুক্ষণ এই জলাশয়ে প্রকৃতির কোলে নিজেকে সঁপে দেন,মন জুড়িয়ে যাবে।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img