নিজস্ব প্রতিনিধি, মধ্যমগ্রাম : করোনা আক্রান্ত মধ্যমগ্রাম পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরের অবস্থা এখন স্থিতিশীল। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শ্বাসকষ্টের কারণে তাঁকে এখনও অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তবে নতুন করে অবস্থার কোনও অবনতি হয়নি। দুপুরের খাওয়া-দাওয়াও করেছেন তিনি। মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান রথীন ঘোষও জানিয়েছেন, কাউন্সিলর স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন। চিকিৎসায় তিনি সাড়া দিচ্ছেন। কোনও ধরনের গুজবে কান না দিয়ে মধ্যমগ্রামবাসীকে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন রথীনবাবু।
কাউন্সিলরের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর তাঁর পরিবারের ৬ জন সদস্যকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা সবাই রয়েছেন বারাসতে অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কোয়ারেন্টিন সেন্টারে।
সেইসঙ্গে আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা দলের ৭ জন কর্মীকেও এই কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে আসা প্রত্যেকেরই কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক। তাই এঁদের সবাইকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রেখে সোয়াব বা লালারস পরীক্ষা করা হবে। এই সময়কালের মধ্যে কোনওরকম সংক্রমণ দেখা না গেলেও, তাঁদের আরও ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
জ্বর,সর্দি, কাশি নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে থাকার সময় কাউন্সিলরের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতে আসতেন দলের বেশ কয়েকজন কর্মী এবং তাঁর গাড়ির চালক। লকডাউনের সময় তাঁর বাড়ি থেকে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন দুঃস্থ পরিবারের কাছে তা পৌঁছে দিতেন দলের কর্মীরাই। এছাড়া তিনি যখন আরজি করে ভর্তি ছিলেন, তখনও তাঁকে দেখতে যেতেন গাড়ির চালক এবং দলের কর্মীরা। কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার আগে এরা কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এলাকার বাসিন্দারাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
মধ্যমগ্রামের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল সদস্য কীভাবে সংক্রমণের কবলে পড়লেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। পরিবারের সদস্যরা সবাই কোয়ারেন্টিনে থাকায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিককালে তিনি বাইরে কোথাও যাননি। জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুবাদে তাঁকে এলাকার মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতেই হয়। তাই এই ভাইরাস বহনকারী কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার কারণেও সংক্রমণ হতে পারে।
লকডাউন শুরুর আগে থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কাউন্সিলর। জ্বর,সর্দি, কাশির সঙ্গে হাত,পা ব্যথারও উপসর্গ ছিল তাঁর। গত বৃহস্পতিবার অবস্থার অবনতি হলে, তাঁকে আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সোয়াব পরীক্ষার পর শনিবার তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সেদিন রাতেই তাঁকে নিয়ে আসা হয় বেলেঘাটা আইডি- তে।
কাউন্সিলরের আগে মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যানের ওয়ার্ড মাইকেল নগরে ভাড়া থাকা কেরলের এক নার্সও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি যে বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করেন, সেখান থেকেই সংক্রমণ ঘটেছিল বলে চিকিৎসকদের ধারণা। কিন্তু কাউন্সিলরের ক্ষেত্রে সেরকম কোনও যোগসূত্র এখনও পর্যন্ত মেলেনি। তবে ওই নার্স এখন সুস্থই রয়েছেন।