হোমসাহিত্য-সংস্কৃতিঅণুগল্প : মেমবুড়ি

অণুগল্প : মেমবুড়ি

অণুগল্প : মেমবুড়ি

সুব্রত সরকার

“বিশ্বাস কর, তোকে একদম চিনতে পারি নি!”

“তাই!”

“কেমন আছিস?”

“কেমন দেখছিস?”

“কি বলব বুঝতে পারছি না, তুই আমাদের কলেজের সেই মেঘনা!”

“খুব অবাক হচ্ছিস তাই না!”

“হচ্ছি তো। কিন্তু…”

“এমন কুরূপা হলাম কেমন করে! তাই ভাবছিস তো?”

“সত্যিই তাই…”

“রূপের জ্বালা অনেক, আগুনে অনবরত পতঙ্গ আসছিল…”

“রাহুলের কি খবর?”

“কবে শেষ হয়ে গেছে সে সম্পর্ক।”

“কেন?”

“রূপসী বউকে শো-কেসে পুরে রাখবে, তা হয় বল!”

“কিন্তু তোরা তো…”

“প্রেম করে বিয়ে করেছিলাম! বিপ্লবীর প্রেম যে অত পচা শামুকের সন্দেহে ভরা তা তো বুঝতে পারি নি!”

“তারপর…”

“এরপর অরূপ এল জীবনে। কিন্তু দু’বছর! সেও রূপ কি রাণীকে শেকলে বাঁধতে চায়!”

“তারপর…”

“এরপর একটা বুড়ো প্রেমিক জুটল। বেশ ছিল।”

“কি হল?”

“ভীমরতি শুরু হল কিছুদিন পর… খালি বারণ, এর সাথে কথা বলবে না, ওর দিকে তাকাবে না…”

“তাই!”

“ভেঙ্গে গেল কাঁচের গ্লাস! শরীরও ভাঙ্গল। কত আর সামাল দেবে?”

“তুই কি অপূর্ব দেখতে ছিলিস!”

“লুকিয়ে লুকিয়ে তো খুব দেখতিস। ভীতুর ডিম ছিলিস একটা!”

“আজও ভীতুই আছি!”

“আমি কেমন মেম বুড়ি হয়ে গেছি তাই না!”

“জানি না কি বলব…”

“জানি, বলতে লজ্জা পাচ্ছিস।”

“না না, ঠিক তা নয়…”

“জানিস তো অনেক যত্ন করে নিজেকে এমন কুরূপা করে তুলেছি।”

“মানে?”

“রূপের জ্বালায় জ্বলতে আর পারছিলাম না। খালি পতঙ্গ আসে আর পুড়ে মরে। কিন্ত আমিও তো পুড়তে পুড়তে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছিলাম!”

“বুঝতে পারছি…”

“মেম বুড়ি হয়ে গিয়ে এখন বেশ আছি…!”

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img