দেবদাস কুণ্ডু
রেজিস্ট্রি অফিস থেকে বেরিয়ে আমি বললাম, এবার কোথায় যাবো?
বাড়ি ফিরতে পারবে না। তোমার বাবা ঘর থেকে বের করে দেবে। ভজহরি বলল, জানি। খবরটা রয়ে সয়ে দিতে হবে।
এক কাজ করবে?
কি কাজ?
আমার দেশের বাড়ি চলো। দেশে আমার একটা কাজ আছে।
তানিয়া বললো, সেই ভালো। কোন হোটেলে আমি রাত কাটাবো না।
সন্ধ্যায় ট্রেনে চেপে বোলপুর। বাসে চেপে বনতুলসী গ্রাম।
পরদিন বলহরিদার বৌ বলল, এভাবে তো গ্রামে থাকা যায় না। সিঁদুর পরিয়ে দিল। হাতে প্লাস্টিক শাখা। বেশ লাগছে তানিয়াকে। নতুন বৌয়ের মতো।
বলহরিদার মাটির দোতলার ঘর আমাদের জন্য ছেড়ে দিল।
ঘরের সামনে বারান্দা। দাঁড়িয়ে আছে তানিয়া। আমি পিছনে। সামনে বড় ঝিল। চারপাশে বাঁশ বন। মাথায় চাঁদ। রাতের অন্ধকার আলো করে দিন করে দিয়েছে জ্যোৎস্না। বাঁশবনের পাতায়, জলে, উঠোনে এমনকী দোতলার বারান্দায় শুয়ে আছে রূপালি জ্যোৎস্না।
মাঝে মাঝে রাত জাগা একটা পাখি ডাকছে। বড় রোমান্টিক রাত। আমরা বারান্দার জ্যোৎস্নার বিছানায় শুয়ে পড়লাম। সারারাত চলল আদর পর্ব। শেষে বাঁশবনের আড়ালে জল মেশানো আলতার মতো ভোর। সেও এক মুগ্ধ বিস্ময়।
এখন আমি ষাট। তানিয়া পঞ্চাশ। তানিয়া বললো, বনতুলসি গ্রামের কথা খুব মনে পড়ে। সেদিনের সেই সুখ সেই আনন্দ আর কোনদিন পাবো না।
তুমি কেন? আর কেউ কোনদিন পাবে না।আমি বললাম।
তানিয়া অবাক হয়ে বলল, কেন?
ভারত ডিজিটাল ইন্ডিয়ার দিকে পা বাড়িয়েছে যে।