হোমআজকের সেরা খবরমাদকের নেশা আর পরকীয়া,শেষ করে দিল কুড়ি বছরের সুন্দরী নয়নাকে?

মাদকের নেশা আর পরকীয়া,শেষ করে দিল কুড়ি বছরের সুন্দরী নয়নাকে?

মাদকের নেশা আর পরকীয়া,শেষ করে দিল কুড়ি বছরের সুন্দরী নয়নাকে?

(CRIME REPORTER: এই পর্বে শোনানো হবে নানান অপরাধ কাহিনী। বিভিন্ন রহস্যজনক ঘটনার নেপথ্য কাহিনী। বিখ্যাত গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর তদন্তের রোমহর্ষক গল্প। বিভিন্ন দেশের গুপ্তচর সংস্থাগুলোর গোপনে খবর সংগ্রহের গল্প আড্ডার মত করে উঠে আসবে বিশিষ্ট সাংবাদিক হীরক কর -এর কলমে।)

হীরক কর : ১৮ নভেম্বর, বুধবার, ২০২০। সবে শহর কলকাতায় অল্প অল্প করে শীত পড়তে শুরু করেছে। একবালপুর থানায় তেমন কেউ নেই। দু’একজন কনস্টেবল এদিক-ওদিকে রয়েছেন। একজন আবার ভিজিটরদের বেঞ্চে গা এলিয়ে দিয়েছেন। ডিউটি অফিসার চেয়ারে বসেই মাথাটা শুইয়ে দিয়েছেন টেবিলের ওপর। অনেকক্ষণ আগেই থানার ঘড়িটা ঢং ঢং করে রাত্রি দু’টো বেজে গেছে বলে জানান দিয়েছে।

এমন সময় ক্রিং ক্রিং, বেজে উঠেছে টেলিফোনটা। একটু ঝিমুনি এসে গিয়েছিল ডিউটি অফিসারের। বড়বাবু নয় তো ? কিংবা ডিসি সাহেব? বাঁ হাতের রিস্টের দিকে তাকালেন ডিউটি অফিসার। হাত ঘড়িটা বলছে, রাত আড়াইটে। কিন্তু ওরা এত রাতে ল্যান্ড লাইনে ফোন করবেন কেন? মোবাইল তো আছে। আজকাল পুলিশের সব কাজ মোবাইলেই হয়। একটু বিরক্তি নিয়ে ফোনটা তুললেন তিনি। ও প্রান্ত থেকে কেউ যেন হাঁপাচ্ছে। পুরুষ কন্ঠ, স্যার, এখানে একটা বস্তা পড়ে আছে ।
-কোথায় ?
-৭এফ, এমএম আলি লেনের সামনে স্যার।
কিছু একটা ব্যাপার আছে স্যার। আমি বস্তাটা দেখতে গিয়ে দেখি বেশ ভারী। নাড়াচাড়া করতেই একটা আঙুল বেরিয়ে এল।

  • আপনি কে বলছেন  ?
  • আজ্ঞে আমি রোহিত, না না না সাজিদ।
    -আপনি ওখানেই থাকুন। আমরা আসছি ।

রাতের কলকাতার কুয়াশা ভেজানো অন্ধকার কাটিয়ে লাল-নীল আলো জ্বালিয়ে ৭এফ, এমএম আলি লেনের দিকে ছুটল কলকাতা পুলিশের গাড়ি । ঘটনাস্থলে পৌছতেই এগিয়ে এল সাজিদ। সঙ্গে কয়েক জন। অফিসার ধমকের সুরেই বললেন, -আপনি সাজিদ। থানায় ফোন করেছিলেন।
-হ্যাঁ, স্যার।
-তা, এত রাতে আপনি এখানে কি করছিলেন  ?
-এটাই আমার বাড়ি। আমার বাড়ির সামনেই বস্তাটা পড়ে রয়েছে। সাজিদ দাবি করে, সিগারেট কিনে ফেরার সময়ে সে বস্তাটি পড়ে থাকতে দেখে। সে আরও জানায়, তাতে ভারী কিছু রয়েছে সন্দেহ হওয়ায় এগিয়ে গিয়ে তার মধ্যে আঙুল দেখতে পায় সে। এর পরেই সে পুলিশে খবর দেয় । 
অফিসার বলেন- বস্তা খোল।
ফ্যাল ফ্যাল করে অফিসারের দিকে তাকিয়ে থাকে সাজিদ।
-খোল, আমি বলছি তো খোল।
আশ্বাস পেয়ে দড়ি দিয়ে বাঁধা বস্তাটা খুলে ফেলে সাজিদ।

সাদা চটের সিমেন্টর বস্তা থেকে বেরিয়ে আসে এক তরুণীর দেহ। পরে জানা যায় তাঁর নাম সাবা খাতুন ওরফে নয়না। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যায়, শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করা হয়েছে। তাঁর ডান হাতে সিগারেটের ছ্যাঁকার দাগ এবং পায়ে নখের আঁচড়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে আসে, সাবাকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।

কিন্তু খুন করার পরে কে বা কারা বস্তাবন্দি দেহ ৭ এফ, এমএম আলি লেনের ফুটপাতে ফেলে গেল?, ওই এলাকার সিসি টিভি ক্যামেরা খারাপ থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় তদন্তকারীদের।তবে প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল, স্থানীয় কেউই এই কাজ করেছে।

রোহিত ও ইমরান (নিহত সাবা খাতুন ওরফে নয়নার দুই পরিচিত যুবক), সাবার বান্ধবী সোনম ও তাঁর মা রেশমা এবং আরও দুই পরিচিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের রাতে তাঁদের অবস্থান জানার চেষ্টা করছিলেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা। তাঁদের সূত্র ধরেই পুলিশকে অবাক করে সাজিদের নাম সামনে আসে। তরুণী খুনের পিছনে পরিচিত কেউ রয়েছে, এ ব্যাপারে আগেই  অনেকটাই নিশ্চিত ছিল পুলিশ। খুনের আগে সম্ভবত শারীরিক সম্পর্কও হয়েছিল। তেমনই ইঙ্গিত মিলেছিল ময়নাতদন্তে। মিলেছে নিগ্রহের প্রমাণও। সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।

গত বুধবার সন্ধ্যায় সাবাকে ফোন করে ডেকে পাঠায় রোহিত ওরফে সাজিদ। সেই সময়ে রোহিতের স্ত্রী আঞ্জুম বাড়িতে ছিলেন না। তিনি ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সাবা রোহিতের বাড়ি এলে দু’জনে প্রথমে বিয়ার পান করেন। তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়। তার পরে সাবা রোহিতকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাতে রোহিত রাজি না হলে সাবা ৭০ হাজার টাকা দাবি করেন। পুলিশের দাবি, সাজিদ  জেরায় জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে দু’জনের মধ্যে গোলমাল শুরু হলে সে রাগের মাথায় সাবাকে গলা টিপে খুন করে। তার পরেই দেহটি কী করে লোপাট করা যায়, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে সে। শেষে আঞ্জুমকে ফোন করে ডেকে পাঠায়।

কথা হচ্ছিল তদন্তকারী এক অফিসারের সঙ্গে। জানা গেল, ফোন পেয়ে আঞ্জুম একাই ফিরে আসে। দু’জনে মিলে একটি সিমেন্টের  বস্তায় বছর কুড়ির  সাবার দেহ পুরে সেটি সেলাইও করে ফেলে। গভীর রাতে বস্তাটি অন্যত্র ফেলে আসবে বলে তারা অপেক্ষা করতে থাকে। এর মধ্যে বাপের বাড়ি থেকে শিশু সন্তানকে নিয়ে এসে, তাকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়েও দেয় ওই দম্পতি। রাত বাড়লে দু’জনে মিলে বস্তাবন্দি দেহটি নিয়ে দূরে ফেলে আসার জন্য বেরোয়। কিন্তু নীচে পৌঁছনোর পরে সেখানে তিন যুবক চলে আসায় ভয় পেয়ে বস্তাটি বাড়ির বাইরের ফুটপাতে রেখেই দু’জনে উপরে উঠে যায়। পরে ফের নীচে নেমে আসে সাজিদ। সে পাড়ার একটি দোকান থেকে দু’বার সিগারেট কিনে আনে। রাত আড়াইটে নাগাদ সে নিজেই একবালপুর থানায় ফোন করে বস্তা পড়ে থাকার কথা বলে। 

তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ তার কথা মেনেও নেয়। বুধবার রাত দশটার আগেই তাঁর ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে সন্ধে থেকে রাত দশটার আগেই খুনটি হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করেন  তদন্তকারীরা। সন্ধের পর সাবা কোথায় ছিলেন, ফোনের শেষ টাওয়ার লোকেশন থেকে তা জানার চেষ্টা করেন  তদন্তকারীরা। একই সঙ্গে সন্দেহভাজনের তালিকায় থাকা লোকজনের মোবাইলের তথ্যও খতিয়ে দেখা হয়। তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ সাজিদের  কথা মেনেও নেয়। পরে সাবার মোবাইল ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করে পুলিশ দেখে, নয়না রোহিতের সঙ্গেই শেষ বার কথা বলেছিলেন। আশপাশের লোকজনের থেকেও পুলিশ রোহিতের সঙ্গে সাবার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা জানতে পারে। শেষে সাজিদকে আটক করে জেরা করতে শুরু করলে, সে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, ওইদিন নয়নার মোবাইলে একটি ফোন আসে। তখন তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তারপর থেকে তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে খুনের পরে নিজেকে বাঁচাতে এবং পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে থানায় নিজেই ফোন করে সে। একবালপুরের তরুণী খুনের ঘটনায় রোহিতকে গ্রেফতারের পরে এমনই তথ্য মিলেছে বলে জানান তদন্তকারীরা।

রোহিতের পাশাপাশি তার স্ত্রী আঞ্জুম বেগমকে দেহ লোপাটের চেষ্টায় সাহায্য করার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার আদালতে ধৃতদের ১২ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়।মিশন রোড ও ড. সুধীর বসু রোডের কাছে মহম্মদ তিরিশ বছরের সাজিদ হোসেন ও তাঁর স্ত্রী ছাব্বিশ বছরের অঞ্জুম বেগমকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ।সাবাকে খুনের পর বস্তাবন্দি করে রাস্তায় ফেলে আসতে সাহায্য করে অঞ্জুম। 

এই খুনের ঘটনাটা আসলে অনেক আগেই ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা  করা। খুন করে কীসে রাখবে, সেসবও ভেবে রেখেছিল সাজিদ। বছর কুড়ির নয়না ছিল সুন্দরী এবং বেপরোয়া। অনায়াসেই সে গভীর রাতে স্কুটি নিয়ে পাড়ি দেয় ময়দান ছাড়িয়ে ভবানীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। আর সেই নয়নার সঙ্গেই নিজের স্ত্রী থাকা সত্বেও অবৈধ সম্পর্ক চালাত সাজিদ। জেরায় তারা পুলিশকে জানিয়েছে, খুনের ঘটনায় মহম্মদ সাজিদ হোসেন এবং তাঁর স্ত্রী অঞ্জুম বেগম দুজনেই যুক্ত ছিল। পরিকল্পনা মাফিক আগে থেকেই বস্তা কেনা ছিল। জেরায় অভিযুক্ত  সাজিদ জানিয়েছে যে, নয়নার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল তাঁর। সেই সুযোগে দীর্ঘ দিন ধরে তাকে ব্ল্যাক মেল করছিল নয়না। তাই সম্পূর্ণ ঠান্ডা মাথায় তাঁকে বাড়িতে ডাকে সাজিদ। যেখানে নয়নাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে সে। এই কাজে সাহায্য করে তার স্ত্রী।

গত শুক্রবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নয়নার পরিচিত দুই যুবক রোহিত ওরফে সাজিদ এবং ওয়াসিম বিল্ডার ওরফে ইমরানকে। ইমরান বুধবার সন্ধায় সাবাকে ফোন করেছিলেন বলে খবর। তার পর যে বান্ধবীর বাড়িতে থাকতেন সাবা, সেখান থেকে তিনি বেরিয়ে যান।

বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন নাকি অত্যধিক নেশার টানে মৃত্যু হল একবালপুরে সাবা খানের? গোটা ঘটনা নিয়ে এখনও খানিক ধন্দে তদন্তকারীরা। তবে ঠিক কী কারণে সাবাকে খুন করা হতে পারে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, খুব ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছেন নয়না ওরফে সাবা বা সুনয়না। তাঁদের এক ভাই আছে। স্ত্রীর মৃত্যুর পর সন্তানদের মা ও বউদির কাছে রেখে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে নতুন সংসার পাতেন বাবা শেখ দুলারা। পঞ্চম শ্রেণির পর পড়াশোনা করেননি সাবা। ধীরে ধীরে বিভিন্ন লোকের সাথে মিশতে শুরু করেন। সুন্দরী সাবার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে এগিয়ে এসেছিলেন বহু তরুণ। বিয়েও করতে চেয়েছিলেন। বোনের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু সংসারের দিকে না গিয়ে ক্রমে বাউন্ডুলে হতে শুরু করেন তিনি।

কুসঙ্গে পড়ে বিড়ি-সিগারেট থেকে শুরু করে ক্রমাগত মদ্যপান, গাঁজা, অন্যান্য মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যোগ হয় মাদকচক্রের সঙ্গে। মাদকের নেশা ছাড়ানোর জন্য বেহালায় একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রেও বেশ কয়েকদিন রাখা হয়েছিল তাঁকে। তবে তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। ওই তরুণীর মাদকের নেশার পাশাপাশি উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের বিষয়ে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সে দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার সঙ্গে আরও একটি বিষয় ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। একটি মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে, নিহত তরুণী মাদক কারবারীদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ওই এলাকায় এক বান্ধবীর বাড়িতে থাকতেন। এমনও শোনা যাচ্ছে, সেই বান্ধবী এবং তাঁর মা-ও মাদক কারবারীদের সঙ্গে যুক্ত। তদন্তকারীরা এই সব দিকও খতিয়ে দেখছেন। তাই, একটাই প্রশ্ন উঠছে যে বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার জন্য খুন হতে হলো সাবাকে, নাকি তার অত্যধিক নেশা দ্রব্যের প্রতি আসক্তি তাকে এরকম মর্মান্তিক পরিণতির দিকে ঠেলে দিল।

জেরায় সাজিদ খুনের কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, কিছুদিন ধরে সাবা তার কাছে টাকা চাইছিল। টাকা না দিলে তার স্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়ে দেবে বলেও ভয় দেখাচ্ছিল। কিন্তু টাকা দিতে রাজি হয়নি সাজিদ। তখন ব্ল্যাকমেইলিং অন্যমাত্রা নেয়। রোহিতকে বিয়ে করতে চেয়ে কয়েকটি ঘনিষ্ঠ ছবি এবং ভিডিও নিয়ে রোহিতকে ব্ল্যাকমেল করছিল নয়না ওরফে সাবা।

অপরদিকে যুবতী সাবার সঙ্গে স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কের কথা জেনে ফেলেছিলেন সাজিদের স্ত্রী অঞ্জুম বেগম। তাকেও স্বামীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল করে দেবে বলেও হুমকি দেয়। এরপরই ওই তরুণীকে খুন করার পরিকল্পনা করে ফেলে ওই দম্পতি। সেইমতোই ডেকে পাঠিয়ে খুন করা হয় সাবাকে। সবমিলিয়ে পরকীয়া সম্পর্কের মর্মান্তিক পরিনতির শিকার হতে হল সাবাকে। যদিও কী ভাবে ওই তরুণীকে খুন করা হল, তার এখনও স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img