ভারতীয় অর্থনীতির পক্ষে স্বস্তির খবর। করোনা আর লকডাউনের ধাক্কা সামলে ক্রমশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ভারতের অর্থনীতি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের প্রথম ৩ মাসে (এপ্রিল-জুন, ২০২১) দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি পেয়েছে ২০.১ শতাংশ।
জিডিপি বৃদ্ধির এই হার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই) পূর্বাভাসকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। চলতি বছরের গোড়ায় আরবিআই জানিয়েছিল, ২০২১-২২ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি-র বৃদ্ধির হার ১৮.৫ থেকে ২৬.২ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে। পরে জুন মাসে তা সংশোধন করে আরবিআই জানায়, ২০২১-২২ অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৯.৫ থেকে ১০.৫ শতাংশ হতে পারে।
গত শতকের ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে এখনও পর্যন্ত এই জিডিপি (GDP) বৃদ্ধির হার দ্রুততম। তবে আর্থিক বিশেষজ্ঞরা এখনই উচ্ছ্বাসের কারণ দেখছেন না। তাঁদের মতে, গত বছর এই একই সময়ে জিডিপির রেকর্ড সংকোচন হয়েছিল। ফলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই এত বেশি বৃদ্ধি মনে হচ্ছে। অর্থনীতির ভাষায় একে Base Level প্রভাব বলা হয়, যার অর্থ হল, পরিসংখ্যানে যতই বৃদ্ধি মনে হোক না কেন, বাস্তবে পরিস্থিতি কিন্তু ততটা সন্তোষজনক নয়।
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে রফতানি বেড়েছে প্রায় ৩৯ শতাংশ, যা জিডিপির প্রায় এক চতুর্থাংশ। আশার কথা হল, অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই ভারতীয় অর্থনীতি দ্রুত হারে পুরনো ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে।
গত বছর এপ্রিল থেকে জুন, এই তিন মাস দেশে কড়া লকডাউন ছিল। সেই সময়ে প্রায় ২৪.৪% হারে ভারতীয় অর্থনীতির সঙ্কোচন ঘটেছিল।
গত অর্থবর্ষে ভারতে জিডিপি সংকোচনের হার ছিল ৭.৩ শতাংশ। লকডাউনের কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তুলনামূলকভাবে চলতি অর্থবর্ষে অর্থনীতির ওপর দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব সেভাবে পড়েনি। কারণ হিসেবে বলা যায়, প্রথম অর্থবর্ষের তুলনায় দ্বিতীয় অর্থবর্ষে লকডাউনের কড়াকড়ি অনেকটাই কম ছিল। মার্চ (জানুয়ারি-মার্চ, ২০২১) ত্রৈমাসিকে ১.৩% বৃদ্ধি পেয়েছিল অর্থনীতি।
২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন, ২০২০) রেকর্ড পতন হয়ে জিডিপির সঙ্কোচন বা ঋণাত্মক বৃদ্ধি হয়েছিল মাইনাস ২৪.৪ শতাংশ। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়ে দাঁড়ায় (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২০) মাইনাস ৭.৫ শতাংশে।