হোমরাজ্য'গরিবের ডাক্তার' গৌরাঙ্গ গোস্বামী নেই, করোনায় ৫ টাকার ডাক্তারের মৃত্যুতে কালনায় শূন্যতা

‘গরিবের ডাক্তার’ গৌরাঙ্গ গোস্বামী নেই, করোনায় ৫ টাকার ডাক্তারের মৃত্যুতে কালনায় শূন্যতা

‘গরিবের ডাক্তার’ গৌরাঙ্গ গোস্বামী নেই, করোনায় ৫ টাকার ডাক্তারের মৃত্যুতে কালনায় শূন্যতা

করোনা কেড়ে নিল কালনার জনদরদী চিকিৎসক গৌরাঙ্গ গোস্বামীকে। রোগীদের থেকে ফি নিতেন মাত্র ৫ টাকা। তাই এই চিকিৎসককে গোটা বর্ধমানের মানুষ চিনতেন ‘গরিবের ডাক্তার’ হিসেবে। শনিবার সকালে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

দিন কয়েক আগে করোনায় আক্রান্ত হন গৌরাঙ্গবাবু এবং তাঁর স্ত্রী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গৌরাঙ্গবাবুকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয় কালনার মানুষের ‘ঈশ্বর’কে।

১৯৭৮ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর কালনার মানুষের সেবায় সঁপে দিয়েছিলেন নিজেকে। প্রথমে ফি নিতেন তিন টাকা করে। পরে খুচরো পয়সার সমস্যার কারণে তা বেড়ে হয় পাঁচ টাকা। পরিচিত ঘনিষ্ঠজন বা বন্ধুরা কেউ ভিজিট বাড়ানোর কথা বললে, ডাক্তারবাবু মজা করে বলতেন, যেদিন পাঁচ টাকার কয়েন বা নোট  উঠে যাবে, সেদিন থেকে ফি বাড়ানোর কথা ভাবনাচিন্তা করবেন।

শুধুমাত্র বামপন্থী রাজনীতিতে বিশ্বাসীই ছিলেন না, একেবারে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। চিকিৎসার পাশাপাশি সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। তবে যতই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকুন না কেন, নিয়ম করে রোগী দেখার কাজ কখনই বন্ধ করেননি। কালনা তো বটেই, শান্তিপুর, নবদ্বীপ, কাটোয়া সহ দূরদূরান্ত থেকে তাঁর রোগীরা ছুটে আসতেন। শুধুমাত্র ৫ টাকা ভিজিট নেওয়া নয়, নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে দুঃস্থ রোগীদের ওষুধও কিনে দিতেন।

২০০০ থেকে ২০১০ দু’বারের জন্য কালনা পৌরসভার চেয়ারম্যান হয়েছিলেন গৌরাঙ্গবাবু। ১৯৮৮ সালে কালনা শহরের সিপিএমের লোকাল কমিটির প্রথম সম্পাদক হন তিনি। এরপর কালনা পৌরসভার কাউন্সিলরেরও দায়িত্ব সামলেছেন। মৃত্যুর দিন পর্যন্ত তিনি কালনা শহরের সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক পদে বহাল ছিলেন।

কালনা জুড়ে এখন শুধুই শূন্যতা। প্রিয় ডাক্তারবাবুকে আর কখনই তাঁর চেম্বারে দেখা যাবে না।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img