দেবস্মিতা নাগ
কলেজ স্ট্রিট (College Street) ও মহাত্মা গান্ধী রোডের (Mahatma Gandhi Road) সংযোগস্থলে পুরোনো কাঠের চেয়ার-টেবিল, জানলায় লাল পর্দা, সাবেকি মেঝে, বেলজিয়াম গ্লাসের জানলার কাচ। ১০২ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা দিলখুশা কেবিন “হেরিটেজ”-এর তকমার পেয়েছে। এক কথায় ৮৮ নম্বর মহাত্মা গান্ধী রোডের এই বাড়িতে আজও খুঁজে পাওয়া যায় এক চিলতে পুরোনো কলকাতাকে।
দোকানটির বাইরে প্রতিষ্ঠাতা চুনীলাল দের (Chunilala Dey) আমলের সিমেন্টে খোদাই করে “দিলখুশা কেবিন” (Dilkhusha Cabin) লেখাটি সময়ের সাথে যুদ্ধ করে আজও বেঁচে রয়েছে। এখান থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই তো ভোজনরসিক পটলডাঙ্গার টেনিদার বাড়ি।
এখানে আনাগোনা ছিল ফেলুদারও। বাংলা সাহিত্যের অনেক চরিত্রকেই রসে বসে রাখার দায়িত্বে ছিল এই কেবিন। তাই তো বহু গল্প উপন্যাসে এই কেবিনের উল্লেখ আছে। প্রাচীন কলকাতার থিয়েটার পাড়ার নামজাদা অভিনেতা-অভিনেত্রী, পরিচালক, কবি-সাহিত্যিক, বিদ্বজ্জনদের নিয়মিত আড্ডা বসতো এই কেবিনে। ঠিক যেন কফি হাউসের ক্ষুদ্র সংস্করণ।
স্বাধীনতা সংগ্রামের কালে বিপ্লবীদের অনেক গোপন পরিকল্পনার আঁতুড়ঘর ছিল এই কেবিন। দিলখুশার (Dilkhusa) কবিরাজি কাটলেট, মাটন চপ, ডেভিল চপ, ব্রেস্ট কাটলেট বহু প্রবাদ প্রতিম বঙ্গসন্তানের চিন্তার গোড়ায় রসদ জুগিয়েছে। এখানে স্ন্যাকস ছাড়াও চিরাচরিত ফ্রায়েড রাইস চিলি চিকেনের মত অন্যান্য পেট ভরানো খাদ্যের সম্ভার ও রয়েছে। সেই কারণেই এই কেবিন বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত কারণ পেটে খেলে তবেই বাঙালির মস্তিষ্কে সয়।