হোমঅন্যান্যLord Jagannath : রহস্যময় পুরী মন্দিরের রান্নাঘরের আশ্চর্য কাহিনী

Lord Jagannath : রহস্যময় পুরী মন্দিরের রান্নাঘরের আশ্চর্য কাহিনী

Lord Jagannath : রহস্যময় পুরী মন্দিরের রান্নাঘরের আশ্চর্য কাহিনী

১) রহস্যময় এই জগন্নাথ পুরী Puri Jagannath Temple) মন্দিরের রান্নাঘরে বিবিধ দ্রব্য রান্না করার জন্য কোন বিদ্যুৎ বা যন্ত্র ব্যবহার করা হয় না। উন্মুক্ত কাঠের আগুনের উপর অনেকগুলো তেলের ল্যাম্প বা বাতি ঝুলিয়ে রাখা হয়। আর তার নিচেই সেবকরা রান্নার কাজ সম্পন্ন করেন।

২) এই রান্নাঘরে (Puri Kitchen) অত্যন্ত দ্রুত রান্না সম্পন্ন করা হয়। শুধুমাত্র একদিনের প্রস্তুতিতে একসাথে প্রায় ১০ দশ হাজার লোক বসে প্রসাদ পায়। আর এমনিতে পাঁচ হাজারের উপর দর্শনার্থী প্রসাদ পেয়ে থাকেন।

৩) এই রান্নাঘরটি ৯টি ভাগে বিভক্ত। ২টি ভাগ ২,৫০০ বর্গফুট করে এবং বাকি ৭টি ভাগ এই দুটির চেয়ে একটু ছোট হবে। এই রান্নাঘরে রয়েছে ৭৫২টি মাটির তৈরি উনুন, যার প্রত্যেকটি দৈর্ঘ্যে তিন বর্গফুট করে এবং উচ্চতায় প্রায় ৪ ফুটেরেও বেশি।

৪) রান্না করার (Jagannath Rasui Ghar) প্রক্রিয়াটি বেশ অদ্ভুত। উনুনগুলিতে একটির উপর একটি মাটির পাত্র বসানো হয়। এভাবে প্রায় ৯টি পাত্র থাকে। শুধুমাত্র এই পাত্রগুলির নিচে অবস্থিত আগুনের মাধ্যমেই উপরের পাত্র থেকে শুরু করে শেষে নিচের পাত্রটির রান্না সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ সবচেয়ে ওপরের পাত্রের রান্না আগে হয়। এরপর ওপর থেকে বাকি পাত্রগুলির রান্না পরপর সম্পন্ন হতে থাকে।

৫) এই রান্নাঘরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকেন এক হাজার সেবক। তার মধ্যে ৫০০ সেবক রয়েছেন শুধুমাত্র উনুনে রান্নার কাজে সহায়ককারী হিসেবে।

৬) এখানে কোনও পুরোনো পাত্রে রান্না করা হয় না। প্রতিদিন নতুন নতুন মাটির পাত্রে রান্না করা হয়। একদল শুধু মাটি দিয়ে পাত্র তৈরি করেন। আরেকটি দল সেই পাত্র রান্নাঘরে পৌঁছে দেয়। অন্য একটি দল পাত্রগুলি ধোয়ার কাজ করে। এবং আরেক দল পাত্রে জল ভর্তি করে উনুনে নিয়ে যায়।

৭) তবে এখানে আরেকটি অদ্ভুত বিষয় হল, এখানে গঙ্গা আর সরস্বতী নদী রান্নাঘরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে, যা বাইরে থেকে দেখা যায় না ।

৮) রান্নাঘরে যে সেবকরা থাকে, তাদের বয়স যখন ১২ বছর হয়, তখন থেকে তারা প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু হয়। এভাবে তারা নেমে পড়ে বংশানুক্রমে প্রাপ্ত নির্দিষ্ট সেবায়। সারাজীবন ধরে অর্থাৎ মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তা চলতে থাকে।

৯) এই রান্নাঘরে ১০০টির উপর ভোগের পদ রান্না করা হয়, যা দুটি ভাগে বিভক্ত। এ দুটি ভাগকে বলা হয় পাক্কা এবং সুক্কা। পাক্কা হল, সেদ্ধ করা ডাল, চাল, খিচুরি এবং সমস্ত রকমের সবজি। অন্যদিকে সুক্কা হল, বিস্কুট, মিষ্টি আর বিভিন্ন ধরনের পিঠে।

১০) সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, জগন্নাথের জন্য যে সমস্ত ফল ও সবজি ব্যবহার করা হয়, সেগুলি ২ হাজারেরও বেশি বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজি ও ফলই জগন্নাথের জন্য ব্যবহৃত হয়। অন্য কোন অঞ্চল থেকে উৎপাদিত দ্রব্য জগন্নাথের জন্য ব্যবহার করা হয় না।

জগন্নাথদেব আর লক্ষ্মী দেবীর কৃপায় ধন্য এই রান্না ঘর। তাইতো পুরীর এ রান্নাঘরকে অদ্ভুত রান্নাঘর বলেই অভিহিত করা হয়।

সঞ্জয় বসাক, জগন্নাথ ভক্ত।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img