হোমআন্তর্জাতিকদেশ-বিদেশে বর্ণময় বর্ষবরণের গল্প

দেশ-বিদেশে বর্ণময় বর্ষবরণের গল্প

দেশ-বিদেশে বর্ণময় বর্ষবরণের গল্প

দেবস্মিতা নাগ
নতুন বছরকে উষ্ণ আলিঙ্গনে স্বাগত জানানোর পদ্ধতি একেক দেশে একেক রকম। তবে পদ্ধতি যাই হোক না কেন, উদ্দেশ্য তো সব দেশে একই। নতুন আশায় বুক বেঁধে পুরোনো ম্লান অভিজ্ঞতাগুলোকে ঝেড়ে ফেলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলার প্রাণশক্তি সঞ্চয় করা। বর্ষবরণের অভিনব পদ্ধতিগুলো কোন দেশে ঠিক কেমন সেটা সম্পূর্ণ জানাও একরকম অসম্ভব। তবে কিছু কিছু দেশের বর্ষবরণ সত্যিই ব্যতিক্রমী। এখানে তার

১) স্পেন : এ দেশে বছরের শেষ দিনে মধ্যরাতে প্রত্যেকে 12 মাসের নামে 12টি আঙুর খান। আঙুর খাওয়াও শেষ হয়। সকলে নতুন বছরে প্রবেশ ও করেন। দুটি ঘটনার সমাপতন ঘটানো হয়।1909 সাল থেকে এই প্রথা চলে আসছে। আলিকান্তে নামে এক কৃষক আঙুরের অতিরিক্ত ফলন শেষ করার জন্যে এই প্রথার প্রচলন করেন।

২) ইতালি : নতুন বছরে এখানকার মানুষ বাড়ির অপ্রয়োজনীয় পুরোনো আসবাব বাইরে নিক্ষেপ করেন। তাঁরা বাড়ির সমস্ত দরজা জানালা খুলে রাখেন, যাতে অশুভ শক্তি বাইরে বেরিয়ে যায় এবং শুভশক্তি ভিতরে প্রবেশ করে। এই অবস্থায় প্রবল শীতের হাত থেকে বাঁচতে তাঁরা সমবেতভাবে গান করেন।

৩) জাপান : এদেশের মানুষ সারা দেশের ধর্মস্থানে ১০৮টি করে চাইম ঝোলায়। এই চাইমগুলি ১০৮টি জাগতিক মোহ মায়া থেকে তাঁদের রক্ষা করবে বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন।

৪) রাশিয়া : এখানকার মানুষ মধ্যরাতে একটি কাগজে নিজের আকাঙ্ক্ষা লিখে সেটি আগুনে পুড়িয়ে সেই ছাই পানপাত্রে নিয়ে তা পান করেন, এই আশায় যে, নতুন বছরে তাঁদের সেই আকাঙ্খা পূর্ণ হবে। অর্থাৎ এক কথায়, তাঁরা মনস্কামনার স্বাস্থ্যপান করেন।

৬) ব্রাজিল : শয়ে শয়ে মানুষ এখানকার কোপাকাবানা সৈকতে সাদা পোশাকে হাজির হন। সাদা রং এঁদের পবিত্রতা ও শান্তির প্রতীক। তাঁদের হাতে থাকে ঝুড়ি ভরা উপহার ও ফুল, তাঁরা সেই উপহার সমুদ্রদেবীর উদ্যেশ্যে ভাসিয়ে দেন। এঁদের কাছে সমুদ্রদেবী মাতৃত্ব ও উর্বরতার প্রতীক। যদি উপহারের ঝুড়ি জলে ভাসানোর পর ফিরে না আসে, বুঝতে হবে দেবী উপহার গ্রহণ করেছেন।

৭) ডেনমার্ক : বড় মজাদার এদেশের বর্ষবরণ।এখানে লোকজন বাড়ির যাবতীয় ভঙ্গুর কাপপ্লেট জোগাড় করে এনে তাঁদের বন্ধু বান্ধবদের বাড়ির উঠোনে আছড়ে আছড়ে ভাঙেন। যার বাড়ির বারান্দা বা উঠোনে যত উঁচু ভাঙা বাসনের আবর্জনা জড় হয়, বুঝতে হবে সে তত বেশি সমাদৃত।পরদিনের সাফাই পর্বও উৎসবেরই অঙ্গ।

পৃথিবীর এই সাতরঙা বর্ষবরণ সত্যিই যেন বিশ সালের সমস্ত বিষ মোচন করে এক সুস্থ পরিবেশ উপহার দিতে পারে সেই প্রার্থনা বুকে নিয়েই সভ্যতাকে আরো একবার অদৃষ্টের পথে পা বাড়িয়ে এগিয়ে চলতে হবে।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img