শ্যামল সান্যাল : সেঞ্চুরি করল চিনের কমিউনিস্ট পার্টি (China Communist Party)। ১ জুলাই ১৯২১। সেদিন সাংহাইয়ে গোপনে এক নৌকায় ১২ জন প্রতিনিধির একজন ছিলেন মাও জে দং (Mao Zedong)।
মাও (Mao) পরে কীভাবে সবকটা সিঁড়ি টপকে দল ও সরকারের একমাত্র ও অসম্ভব ক্ষমতাবান নেতা হয়েছিলেন ইতিহাস তার সাক্ষী। তাঁর শেষ করুণ পরিণতিও ইতিহাসে লেখা রয়েছে।
চিনের কমিউনিস্ট পার্টির (China Communist Party) শতবর্ষ নিয়ে ভারতের কোথাও তাপ উত্তাপ দেখা গেল না। করোনা নাকি চিন থেকেই ছড়িয়েছে। ভারতের (India Border) সীমান্ত এলাকায় তারা জবর দখল করে বসে আছে। সম্প্রতি পাকিস্থানের যে ড্রোন জম্মু বিমানঘাঁটিতে বোমা ফেলে গেল, সেই ড্রোন “মেড ইন চায়না” বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে। এক চিনা গুপ্তচর (China Spy) ধরা পড়েছে কদিন আগে। চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এই মুহূর্তে খুব খারাপ ও উত্তেজক অবস্থায় রয়েছে।
একমাত্র একটি বাম রাজনৈতিক দল চিনের প্রবল সমর্থক এখন। এই রাজ্যের সিপিআইএম সেই দল, যারা আজকের দিনটিকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে। ব্যাপারটা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বিশেষভাবে আগ্রহী করেছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক, বিশ্লেষকরা দেখছেন, চিন প্রেমে মজে আছে এই দেশের একটি তথাকথিত বামপন্থী দল। চিন নামে ধনতন্ত্রের পথে জোরে প্যারেড করা একটি আগ্রাসী দেশের একমাত্র রাজনৈতিক দলের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে উল্লসিত সিপিএম এমন একটা দল, যারা ৩৪ বছর এই রাজ্যে সরকার চালিয়ে ভোটে হেরে এখন প্রায় মুছে গেছে।
তাঁদের দৈনিক মুখপত্রে লেখা হয়েছে, “বিপ্লবের সারথি চিনের কমিউনিস্ট পার্টি”। লেখক ওই দলের এক প্রবীণ নেতা। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী কিংবা প্রবল চিনপ্রেমী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নন, লেখকের নাম সুদর্শন রায়চৌধুরী! বাম আমলে হুগলির এই ভদ্রলোক শিক্ষামন্ত্রী হয়েছিলেন। কলেজে পড়াতেন। চিনে উনি কখনও গিয়েছিলেন বলে শোনা যায়নি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কথায়, চিনে (China) গিয়ে থাকলে তিনি এইসব বই পড়া বিদ্যা ফলানোর আগে তিনবার ভাবতেন। বিশাল বড় প্রবন্ধের কোথাও তিয়েন আন মেন স্কোয়ারে মাওয়ের সেনাবাহিনীর গুলিতে কয়েক’শ ছাত্রছাত্রীর খুনের উল্লেখ করতে উনি ভুলে গেছেন! একইসঙ্গে উহান থেকে মহামারী করোনা ছড়িয়েছে কি না, সেই প্ৰশ্ন নিয়ে তিনি একটা শব্দও লিখে উঠতে পারেননি।
কিন্তু সিপিএম (CPM) দলের অনেকেই বললেন, পার্টিটা তো ডকে উঠেছে, এখন যদি কেউ মন্তব্য করেন, চিনের (China) হয়ে গলা ফাটানোর পেছনে নিশ্চয়ই কোনও রহস্য আছে। কলকাতায় চিনা দূতাবাসের অনুষ্ঠানে মহম্মদ সেলিম যোগ দিয়ে কী বললেন, তা দলের কর্মী, নেতারাও জানেন কি? এই চিনই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে (Mamata Banerjee) আমন্ত্রণ করেও, তা ফিরিয়ে নিয়েছিল, এটাও তো ঘটনা। এই দেশের সঙ্গে চরম শত্রুতা করে চলা চিন কোন যুক্তিতে একটা রাজনৈতিক দলের দোস্ত হয়, এই প্রশ্ন নানা মহলে উঠেছে।
ক্রমশ…