২০১৬ সালের ১ জুলাই। দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। সেদিন রাতে ঢাকার হোলি আর্টিজান (Holey Artisan) বেকারিতে নির্মম হত্যালীলা চালিয়েছিল একদল সশস্ত্র জঙ্গি। তাদের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হয়েছিলেন জাপান, ইতালি ও ভারতের ১৭ জন নাগরিক। প্রাণ হারিয়েছিলেন দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন নাগরিক।
হোলি আর্টিজানে হামলার ঘটনাকে বিষয়বস্তু করে “ফারাজ” নামে একটি ছবি তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা হানসাল মেহেতা, যা নিয়ে বাংলাদেশে তীব্র আপত্তি উঠেছে। ছবিটির প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছে ভূষণ কুমারের (প্রয়াত গুলশান কুমারের পুত্র) প্রযোজনা সংস্থা টি-সিরিজ। সহকারী প্রযোজক হিসেবে রয়েছেন অনুভব সিনহা। ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করবেন প্রয়াত শশী কাপুরের দৌহিত্র জাহান কাপুর।
এই ছবি তৈরির বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে ‘অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সাধারণ সম্পাদক রুবা আহমেদের পক্ষ থেকে আইনি নোটিশও পাঠানো হয়েছে।
হোলি আর্টিজানে হামলায় নিজের একমাত্র সন্তান মরহুমা অবিন্তা কবিরকে হারিয়েছেন রুবা আহমেদ। তাঁর বক্তব্য, সেদিনের ঘটনা নিয়ে কোনওরকম সিনেমা তৈরি হলে, তা তাঁর পরিবারের কাছে অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক হবে। কারণ, তাতে কষ্টদায়ক স্মৃতিগুলি আবার তাঁর ভারাক্রান্ত মনকে প্রতিনিয়ত বিদ্ধ করবে।
ওই আইনি নোটিশে আরও বলা হয়েছে, “অতীতে বিদেশী একটি সিনেমায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। তাই এ ধরনের ছবি তৈরি হলে তা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্ট হবে, যার নেতিবাচক প্রভাব গোটা বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে চরম ক্ষতির মুখে ঠেলে দেবে।”
দুই বিশিষ্ট ভারতীয় পরিচালক মহেশ ভাট এবং গুল পানাগ একই ধরনের একটি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু আইনি বাধা পেয়ে তাঁরা শেষ পর্যন্ত তা বাতিল করে দেন।