দেবস্মিতা নাগ
লাগবে না কোনও লম্বা ছুটি বা বড় বাজেট। পাড়ি দিতে হবে না জাহাজে বা উড়োজাহাজে। তবু খুঁজে পাওয়া যাবে ছোট্ট এক টুকরো আন্দামানকে। কলকাতা থেকে মাত্র 5 ঘন্টা দূরেই। দ্বীপের নাম মৌসুমী। দ্বীপের গাছে টাঙানো দড়ির হ্যামকে দুলতে দুলতে রকমারি মাছের রোস্ট অথবা গলদার তন্দুরি কিংবা কচি ডাব খেতে খেতে নিমেষে কেটে যাবে লক ডাউনের হ্যাংওভার। সমুদ্রের হাল্কা হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে মাঝিদের নৌকায় সেরে নেওয়া যাবে সংক্ষিপ্ত প্রমোদ বিহার।
গঙ্গার মোহনায় গড়ে ওঠা অসংখ্য দ্বীপের মধ্যে একটা মৌসুনী। ভৌগোলিক অবস্থান অনুসারে সাগর দ্বীপের পূর্বে। মৌসুনী দ্বীপকে মূল ভূখন্ড থেকে আলাদা করেছে চিনাই নদী। বাগডাঙ্গা বা হুজ্জুতের ফেরিঘাট দিয়ে চিনাই পেরিয়ে পৌঁছতে হবে মৌসুনীতে। মৌসুনী থেকে সাগরপাড়ি দিয়ে জম্মুদ্বীপ ভ্রমণে যাওয়া যায়। এটি এই ট্রিপের একটি অন্যতম আকর্ষণ।
কীভাবে যাবেন?
স্বাভাবিক অবস্থায় শিয়ালদা থেকে নামখানা লোকাল ধরে নামখানা নেমে হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদী ব্রিজ পেরোতে হবে। এরপর চিনাই নদীকে জলপথে পেরিয়ে যেতে হয় মৌসুনী দ্বীপে। ট্রেন না চললে স্রেফ বাইক বা গাড়ি করেও রওনা হওয়া যেতে পারে। ধর্মতলা থেকে পাওয়া যাবে বাসও।
থাকা-খাওয়া :
মৌসুনী দ্বীপে ‘ট্রাভেলার্স ক্যাম্প’-এ থাকার বন্দোবস্ত করতে হয়। ক্যাম্পগুলি সবই তাঁবু বা মাটির কুটির, যেগুলি প্রকৃতির কোলে সাজানো রয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হওয়ার জন্য আদর্শ মনোরম ব্যবস্থা।এই সব ক্যাম্পের ট্যুর প্যাকেজে এক রাত ও দু দিনের থাকা, খাওয়া, বনফায়ার এমনকি পর্যাপ্ত পানীয় জল অন্তর্ভুক্ত থাকে। সম্পূর্ণ প্যাকেজ মাত্র ১০০০-১২০০ টাকায়।
এঁটে যায় অর্থাৎ মধ্যবিত্তের পকেটে দিব্বি পোষায়।এখানে দুজনের জন্যে অ্যাডভেঞ্চার টেন্ট, চার জনের ফ্যামিলি টেন্ট ও ছয় জনের গ্রুপ টেন্ট ভাড়া পাওয়া যায়। তাঁবু গুলির মধ্যে রয়েছে ফ্যান ও লাইটের সুব্যবস্থা। সকালে গঙ্গাস্নান দিয়ে দিন শুরু করে দুপুরে সমুদ্র যাত্রা সেরে সন্ধ্যার অস্তগামী সূর্যকে সমুদ্রে ভেসে যেতে দেখে রাতে বারবিকিউ দিয়ে দিন শেষ করে সৈকতে ঢেউ আছড়ে পড়ার শব্দ শুনতে শুনতে ঘুম গাঢ় হয়ে যাবে তাঁবুর ভিতর।
পরদিন সকালে সৈকতের সূর্যোদয় দিয়ে শুরু করে ম্যানগ্রোভ ভ্রমণ দিয়ে শেষ হবে ছোট্ট মৌসুনী সফর। এবারে ফেরার পালা। ফেরার সময় ঠিক মনে হবেই, আবার আসবো ফিরে।