ময়ূরবাহন

ময়ূরবাহন

নীলার্ণব চক্রবর্তী

উত্তম কুমার এসে দাঁড়ালেন রুপোলি পর্দায়
চার দিকের অন্ধকার ভেদ করে দিয়ে পর্দা থেকে তখন চন্দ্রালোক…
ছড়িয়ে পড়ছে… আলো থেকে হাওয়াও বের হয় কখনও কখনও, গবগবে হাওয়া…
রুপোলি পর্দায় দাঁড়ানো উত্তম কুমারের চুলগুলি উড়ছে, এত হাওয়া, তবুও এত উপভোগ কেন… উত্তম হাসছেন, হাওয়ায় হাওয়ায় হাসি… হেসেই ‌যাচ্ছেন… হেসেই…
ওদিকে গাছগুলো সেই ঝোড়ো বাতাসে মাথা দোলাচ্ছে, ভয়ঙ্কর, এই মাথা দুলিয়ে ‌যাওয়া…
আর আলোর হাওয়াটাই একটা গলার শব্দ হয়ে উঠছে… সেই স্বর বহু দূর থেকে ভেসে আসছে… তাই ক্ষীণ…
ক্ষীণ…
এক দিন দু’ দিন… তিন দিন…
চার দিন পাঁচ দিন… গলার শব্দটা কিন্তু বাড়ছে…
গলাটা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শব্দ হয়ে উঠছে… একী… সৌ… মি… ত্র…
এবার সৌমিত্র সশরীরে এগিয়েও আসছেন, নিজের গলার শব্দ অনুসরণ করতে করতে, ওই তো… গাছ পেরিয়ে… আলোর ভিতর দিয়ে, হাওয়ার প্রভাবে, রুপোলি পর্দার দিকে– সৌমিত্র এগিয়ে আসছেন…

এই ভাবে চল্লিশটা দিন… একেবারে স্ক্রিনের কাছটায় সৌমিত্র চলে এলেন, আর তাঁর দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন উত্তম, তিনি তখন রাজবেশ পরে, ঝিন্দের বন্দীর রাজা শঙ্কর সিং,
বললেন, এসো…ময়ূরবাহন এসো…
ময়ূর দ্বিধাজড়ানো, তবুও আঙুলগুলি এগিয়ে দিলেন শেষ প‌র্যন্ত, তুলে নিলেন শঙ্কর তাঁকে এক ঝটকায় স্ক্রিনের ভিতর…

ঝড়ের খেলা শেষ– শেষ।
স্ক্রিনের ভিতর সমুদ্র, এক নৌকায় ভাসছে– দ্য এন্ড… নেপথ্যে তখন ঘোড়ার খুরের শব্দ, হ্রেষা।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img