রিমা কয়াল: বাঙালির মৎস্যপ্রীতি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। কথায় বলে, মাছে-ভাতে বাঙালি। কীভাবে মাছ বাঙালির এত প্রিয় হয়ে উঠল, তা নিয়ে চর্চাও কম হয়নি। সাধারণত মানুষের খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ু। সেইসঙ্গে খাদ্যাভ্যাসকে প্রভাবিত করে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি।
বাংলাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য নদ-নদী। গঙ্গা, পদ্মা, দামোদর, রূপনারায়ণ, ময়ূরাক্ষী, তিস্তা…। আর রয়েছে অসংখ্য পুকুর, খাল, বিল। এই সব নদী বা জলাশয় হল, রুই, কাতলা, পাবদা, ট্যাংরা, কৈ, চিংড়ি থেকে শুরু করে ইলিশ, পমফ্রেট, ভেটকির অবাধ বিচরণক্ষেত্র। উর্বর জমি, খাদ্য ও জলের সহজলভ্যতার কারণে নদীর আশেপাশে জনবসতি গড়ে উঠেছিল।
মাছের নিত্যনতুন খাবারের পদ সৃষ্টিতেই বাঙালির আনন্দ। বাঙালির সবচেয়ে পছন্দের মাছের মধ্যে রয়েছে ষোড়শ ইলিশ, রুই মাছের কালিয়া, চিংড়ি মাছের মালাইকারি, তেল কৈ, চিতল মাছের মুইঠা, ভেটকির পাতুরি, ভাঁপা ইলিশ, পাবদা মাছের ঝাল, চিংড়ি ইত্যাদি। ইলিশ সাগরের মাছ। তবে বংশবৃদ্ধির জন্য নানা স্থানে ঘুরে বেড়ায়। নদীর মোহনায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ দেখা যায়।
নববিবাহিতা বাঙালি কনে যখন তাঁর নতুন গৃহে প্রথম প্রবেশ করে, তখন তাঁকে একটি জীবন্ত মাছ দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। বর ও কনের পক্ষ মাছের আকৃতির মিষ্টিও বিনিময় করেন।
মাছ খাওয়ার নানা উপকারিতাও রয়েছে। মাছে রয়েছে প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি। মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি বড় উৎস, যা আপনার শরীর এবং মস্তিষ্কের পক্ষে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। গবেষকরা মাছ খাওয়ার ১১ ধরনের উপকারিতা খুঁজে পেয়েছেন। উত্তর ও দক্ষিণ ভারতীয়রা অবশ্য বাঙালির মতো মৎস্যপ্রেমী নন।