হোমদেশগভীর সঙ্কটে ইটশিল্প, বন্ধ হচ্ছে উৎপাদন, কেন্দ্রকে দুষছেন মালিকরা

গভীর সঙ্কটে ইটশিল্প, বন্ধ হচ্ছে উৎপাদন, কেন্দ্রকে দুষছেন মালিকরা

গভীর সঙ্কটে ইটশিল্প, বন্ধ হচ্ছে উৎপাদন, কেন্দ্রকে দুষছেন মালিকরা

কেন্দ্রের একতরফা সিদ্ধান্তে বাংলা সহ গোটা দেশের ইটশিল্পে বেনজির গভীর সঙ্কট নেমে এসেছে। পরিস্থিতি এমনই যে, অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া মরসুমে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিকরা।

নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে বুধবার কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। All India Brick & Tile Manufacturers Federation-এর সভাপতি অশোক কুমার তিওয়ারি, Bengal Brick-Field Owners’ Association-এর সভাপতি যোগেশ আগরওয়াল এবং সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষের অভিযোগ, কয়লার দাম তিন গুণ বাড়ানোর পাশাপাশি জিএসটি-র হারও বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসা চালানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।

তাঁরা জানান, “আগে ৫ শতাংশ হারে মাটির তৈরি ইটের ওপর জিএসটি আদায় করা হত। এখন তা বাড়িয়ে ১২ শতাংশ (প্রায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি) করা হয়েছে। সেইসঙ্গে যদি আইটিসি (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট) যদি না নেওয়া হয়, তবে ৬ শতাংশ হারে জিএসটি দিতে হবে, যা আগে ছিল ১ শতাংশ।”

তাঁরা আরও বলেন, “ওপরের দুটি ক্ষেত্রেই জিএসটি রেগুলার ক্যাটাগরিতে নিয়ে আসা হয়েছে। জিএসটিতে কম্পোজিশন স্কিম পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আমাদের ওপর বাড়তি আর্থিক বোঝা চেপেছে।”

Bengal Brick-Field Owners’ Association-এর  সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ বলেন, “গোটা দেশে ইটশিল্পে ৩৫ মিলিয়ন টন কয়লার প্রয়োজন হয়। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পর মাটির তৈরি ইটশিল্পে বেশি কয়লা ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সেই কয়লার দাম তিন গুণের বেশি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে, যা মালিকদের বহন করতে হচ্ছে।”

কয়লা মালিকদের অভিযোগ, “ইট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জারি করেছে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক। ২০ হাজার বর্গ মিটারের বেশি নির্মাণের ক্ষেত্রে লাল ইটের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এতেও ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

প্রতি বছরই অক্টোবর থেকে শুরু হয় ইট তৈরির মরসুম। এবার গোটা দেশের ইট ব্যবসায়ীরা পুরো মরসুমের জন্য ইট উৎপাদন বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা। ইট কারবারীদের অভিযোগ, অতীতে যখনই কোনও সমস্যা তৈরি হয়েছে, সরকার তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের কোনও কথাই শুনছে না বলে অভিযোগ করেছেন ইট মালিকরা।

বর্তমানে দেশে প্রায় এক লক্ষের মতো মাটির ইটভাটা রয়েছে। এই শিল্পে কাজ করেন প্রায় ৪ কোটি মানুষ। গ্রামীণ অর্থনীতিতে এই ক্ষুদ্র শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই শেষ পর্যন্ত মালিকরা উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে, ইটশিল্পে সঙ্কটের পাশাপাশি গ্রামীণ কর্মসংস্থানেও তার ব্যাপক প্রভাব পড়তে চলেছে।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img